ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোলাপবাগ ওয়ার্মআপ, শেষ যুদ্ধ আসছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১০৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, ঢাকায় তারা যে সমাবেশটি করেছেন, সেটি গা গরমের। সামনে ‘শেষ যুদ্ধ’ হতে চলেছে, আর সেই যুদ্ধে বিএনপি জয়লাভ করবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ১০ টা মিটিং করেছি। আজকে শেষ মিটিং। এই মিটিংকে আমরা বলব, আমরা ওয়ার্ম ওয়া্র্ক করেছি। আজকের সমাবেশ থেকে আমাদের প্রধান অতিথি সরকার পতনের ১০ দফা ঘোষণা করবেন। পরবর্তী কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণা হবে। তারপর থেকে শুরু হবে রাজপথের সংগ্রাম। এর পরে হবে আমাদের শেষ যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করব।’

তিনি বলেন, ‘গত ৭ তারিখে আমাদের ওপর সরকারের কর্মচারীরা যে হামলা করেছে, তা ১৯৭১ সালেব ২৫ মার্চের হানাদার বাহিনীর হামলার থেকে কম কিছু না। আমরা বলতে চাই, ক্ষমতা বেশিদিন থাকবে। ইতিহাস পড়েন। শিক্ষা নেন।

‘মানুষ ক্ষেপে গেছে, যত বাধায় দেন, যত গুলিই করেন, মানুষের কাছে সেটা কিছুই না। যার কারণে কাল অনুমতি পাওয়ার পরপর এই মাঠ কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল।’

১০ দফার ঘোষণার পর বিএনপি আর পিছু হটবে না জানিয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমাদের পার্টি অফিসে হামলা করে, আহত করে, নিহত করে ভয় দেখাতে চেয়েছিল। আমাদের কেউ ভয় পায়নি।

‘চল চল চল ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল। এই মাদল কে বাজাচ্ছে? এই মাদল বাজাচ্ছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই মাদল বাজাচ্ছেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আপনারা সেই ছন্দে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আপনারা উজ্জীবিত হয়েছেন। এটি ধরে রাখুন। সামনে কাজে লাগব।

‘তারা আমাদের যতই খেলে দেয়ার চেষ্টা করুক। এবার কেউ পিছু হটবে না। আজকের ঘোষণার পর এক দফা আন্দোলনে যাব। জনগণকে নিয়ে সরকার পতনের লড়াই করে যাব।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে ঢাকায় হরতাল পালন হচ্ছে। এই হরতাল ডেকেছে সরকার। বাস নাই গাড়ি নাই। থমথমে। কী বুঝলেন?

‘এই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হাতে মাল নিয়ে পিকেটিং করছে। এই মাল মানে বোঝেন? এই মাল হলো অস্ত্র। তারা ঢাকার এন্ট্রি গেটে পিকেটিং করছে।’

তিনি বলেন, ‘এই পিকেটিং মানুষ কখন করে? হরতাল কখন করে? সরকার কী আছে? সরকার নেই। বাংলাদেশে কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না।’

১০ দফা ঘোষণা এলে বুকের রক্ত দিয়ে হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা করতে বাধ্য করার কথাও বলেন তিনি।

বিএনপি এই সমাবেশটি করতে চেয়েছিল নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু পুলিশ তাদের অনুমতি দেয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে না গিয়ে অনুমতি ছাড়াই নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়ার পর বুধবার পুলিশের সঙ্গে বাঁধে সংঘর্ষ।

এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ে অভিযানে যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় পাঁচ শ নেতা-কর্মীকে, যাদের মধ্যে আছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সেদিনের সেই ঘটনার পর সমাবেশ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করেই কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ আসে আলোচনায়। তবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগেই মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গভীর রাতে বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার পর বুধবারের সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সমাবেশের আগের দিন বেলা তিনটার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের আলোচনায় ঠিক হয় গোলাপবাগে হবে বিএনপির সেই জনসভা।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিকভাবে যে সমাবেশ করে আসছে, তার শেষ কর্মসূচি হিসেবে হলো এই জমায়েত।

প্রথমে চট্টগ্রাম, এরপর ময়মনসিংহ, তারপর খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, কুমিল্লা এবং রাজশাহীতে হয় এই সমাবেশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গোলাপবাগ ওয়ার্মআপ, শেষ যুদ্ধ আসছে

আপডেট টাইম : ০৫:২৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, ঢাকায় তারা যে সমাবেশটি করেছেন, সেটি গা গরমের। সামনে ‘শেষ যুদ্ধ’ হতে চলেছে, আর সেই যুদ্ধে বিএনপি জয়লাভ করবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ১০ টা মিটিং করেছি। আজকে শেষ মিটিং। এই মিটিংকে আমরা বলব, আমরা ওয়ার্ম ওয়া্র্ক করেছি। আজকের সমাবেশ থেকে আমাদের প্রধান অতিথি সরকার পতনের ১০ দফা ঘোষণা করবেন। পরবর্তী কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণা হবে। তারপর থেকে শুরু হবে রাজপথের সংগ্রাম। এর পরে হবে আমাদের শেষ যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করব।’

তিনি বলেন, ‘গত ৭ তারিখে আমাদের ওপর সরকারের কর্মচারীরা যে হামলা করেছে, তা ১৯৭১ সালেব ২৫ মার্চের হানাদার বাহিনীর হামলার থেকে কম কিছু না। আমরা বলতে চাই, ক্ষমতা বেশিদিন থাকবে। ইতিহাস পড়েন। শিক্ষা নেন।

‘মানুষ ক্ষেপে গেছে, যত বাধায় দেন, যত গুলিই করেন, মানুষের কাছে সেটা কিছুই না। যার কারণে কাল অনুমতি পাওয়ার পরপর এই মাঠ কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল।’

১০ দফার ঘোষণার পর বিএনপি আর পিছু হটবে না জানিয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমাদের পার্টি অফিসে হামলা করে, আহত করে, নিহত করে ভয় দেখাতে চেয়েছিল। আমাদের কেউ ভয় পায়নি।

‘চল চল চল ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল। এই মাদল কে বাজাচ্ছে? এই মাদল বাজাচ্ছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই মাদল বাজাচ্ছেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আপনারা সেই ছন্দে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আপনারা উজ্জীবিত হয়েছেন। এটি ধরে রাখুন। সামনে কাজে লাগব।

‘তারা আমাদের যতই খেলে দেয়ার চেষ্টা করুক। এবার কেউ পিছু হটবে না। আজকের ঘোষণার পর এক দফা আন্দোলনে যাব। জনগণকে নিয়ে সরকার পতনের লড়াই করে যাব।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে ঢাকায় হরতাল পালন হচ্ছে। এই হরতাল ডেকেছে সরকার। বাস নাই গাড়ি নাই। থমথমে। কী বুঝলেন?

‘এই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হাতে মাল নিয়ে পিকেটিং করছে। এই মাল মানে বোঝেন? এই মাল হলো অস্ত্র। তারা ঢাকার এন্ট্রি গেটে পিকেটিং করছে।’

তিনি বলেন, ‘এই পিকেটিং মানুষ কখন করে? হরতাল কখন করে? সরকার কী আছে? সরকার নেই। বাংলাদেশে কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না।’

১০ দফা ঘোষণা এলে বুকের রক্ত দিয়ে হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা করতে বাধ্য করার কথাও বলেন তিনি।

বিএনপি এই সমাবেশটি করতে চেয়েছিল নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু পুলিশ তাদের অনুমতি দেয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে না গিয়ে অনুমতি ছাড়াই নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়ার পর বুধবার পুলিশের সঙ্গে বাঁধে সংঘর্ষ।

এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ে অভিযানে যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় পাঁচ শ নেতা-কর্মীকে, যাদের মধ্যে আছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সেদিনের সেই ঘটনার পর সমাবেশ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করেই কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ আসে আলোচনায়। তবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগেই মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গভীর রাতে বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার পর বুধবারের সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সমাবেশের আগের দিন বেলা তিনটার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের আলোচনায় ঠিক হয় গোলাপবাগে হবে বিএনপির সেই জনসভা।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিকভাবে যে সমাবেশ করে আসছে, তার শেষ কর্মসূচি হিসেবে হলো এই জমায়েত।

প্রথমে চট্টগ্রাম, এরপর ময়মনসিংহ, তারপর খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, কুমিল্লা এবং রাজশাহীতে হয় এই সমাবেশ।